“বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অপরিসীম অবদান রাখার লক্ষ্যে বিশেষ দুটি পরিবারের সকল সদস্যকে রাষ্ট্র আমৃত্যু রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানে বাধ্য থাকিবে।তাদের সকল ব্যয় ভারও রাষ্ট্রই বহন করবে। তারা সকল রাজনীতির ঊর্ধ্বে।”
এ দেশে যদি এমন একটি অধ্যাদেশ জারী করা
যেতো তবে গনতন্ত্র নামক ফুটবল নিয়ে পারিবারিক লোফালোফির অবসান ঘটতো। রাজনীতি ফিরে পেতো তার সত্যিকারের নীতিবোধ, আসতো ভারসম্য।সু্যোগ থাকতো প্রতিভা বিকাশের, সুযোগ থাকতো নেতৃত্ব পরিবর্তনের। শিক্ষাই হতো রাজনীতির হাতিয়ার।
ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করা একটি মেধাবী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে একদিন বড় হয়ে দেশের নেতৃত্ব দেবে, দেশের সেবা করবে। কিন্তু ছাত্র, তরুন, যুব পেড়িয়ে মুল দলে জায়গা করে নিতে নিতেই সে গুড়ে পিপড়ে ধরে, পেড়িয়ে যায় অনেকটা সময়। তারপর আবার পোষ্ট পজিশনের ঝক্কি। অর্ধেকের রাজনীতি এখানেই সমাপ্ত। কি করা ঠিকাদারীই শেষ ভরসা। বাঁচতে তো হবে!
তারপরও কেউ যদি সে বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে সামনে এগিয়ে আসে সেখানে পরিবারতন্ত্রের বংশানুক্রমে গজিয়ে ওঠা খালাতো, ফুপাতো, নানাতো অযোগ্য নেতারা যারা নিজেদের রাজ পরিবারের অংশ মনে করেন এবং অন্য সবাইকে প্রজা, তাদের ভীড়ে নেতৃত্বদানের চিন্তা তো দূর, নিজের ব্যক্তিগত সম্মান নিয়ে টিকে থাকাই দুস্কর হয়ে পড়ে। তখন কেউ কেউ আত্মসম্মানের ভয়ে রাজনীতিতে ইস্তেফা দিয়ে অন্য পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করে সম্মান বাঁচায়।
আর কেউ কেউ সেই বংশানুক্রমিক নেতাদের পশ্চাৎপদে তৈল মর্দন করতে করতে বিবেক, শিক্ষা সব বিসর্জন দিয়ে চাটুকর হিসেবে নেতা বনে যায়। তার সেই দৃঢ় চেতনা, আধুনিক চিন্তা ভাবনার পরিসমাপ্তি কখন ঘটে সে নিজেও টের পায় না।বানরের মতই তৈলাক্ত বাঁশ নিয়েই তার জীবন অবসান ঘটে।
বৃটিশ গেলো আমরা নাকি স্বাধীন হলাম, পাকিস্তানের সাথে ত্রিশ লক্ষ প্রাণ দিয়ে আবার আমরা স্বাধীন হলাম। কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা সেই কনডমে বন্দী হয়েই রয়ে গেলো। জনগণের এখনও গনতন্ত্রের সংজ্ঞাই জানা হলো না। গনতন্ত্র আমাদের কাছে সেই ফুটবলই রয়ে গেলো। দর্শকের সাড়িতে বসে দেখে যাচ্ছি কার পায়ে গনতন্ত্র নামক বল, আর যার পায়েই বল থাক না কেনো হাততালি দিয়ে যাও…
যে ইচ্ছা গোওওওওল দিক তাতে আমাদের কি আসে যায়। আমরা তো পারিবারিক কোঠায় কিংবা চাটুকর কোঠায় খেলোয়াড় হতে পারবো না!
আসাদ জামান
কবি ও কলামিস্ট।